
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী একটি চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা অপরাধ স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, "প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি, তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে।"
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—
- শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল মুহিত (২৯), মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাসিন্দা
- মো. সবুজ (৩০), শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বাসিন্দা
- শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮), ঢাকার সাভারের বাসিন্দা
পুলিশের তথ্যমতে, শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুলের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ ও ঢাকার সাভারে বাস ডাকাতির দুটি মামলা সহ মোট পাঁচটি মামলা রয়েছে।
ডাকাতি ও গ্রেফতার অভিযান
পুলিশ জানায়, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১:৪৫ থেকে ৪:০০ পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্তে ডিবি ও মির্জাপুর থানার একাধিক দল যৌথ অভিযান চালায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫:৩০ মিনিটে সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, তারা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।
উদ্ধারকৃত সামগ্রী:
- লুট হওয়া তিনটি মোবাইল
- একটি ছুরি
- নগদ ২৯,৩৭০ টাকা
পুলিশি গাফিলতি ও শাস্তি
বাস ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা নিতে অনীহা এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এছাড়া, দায়িত্বে গাফিলতির কারণে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
যাত্রীদের অভিযোগ ও পুলিশের বক্তব্য
ঘটনার পরদিন বাসের যাত্রীরা অভিযোগ করলেও নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় মামলা নেওয়া হয়নি। পরে তিন দিন পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় মামলা গ্রহণ করা হয়।
বাসের যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছেন, ডাকাতির রাতে বাসে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, "এখনও ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি, বিষয়টি তদন্তাধীন।"
গ্রেফতারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।